25 June 2012 - 0 comments

মোহনা ৬

সিকদার অনি

অফিসে লাঞ্চটা খুব আনন্দঘন পরিবেশেই হয়। সহকারী ম্যানেজার সাইফুল সাহেব, কামাল সহ আমাদের টীমের এগারোজনের প্রায় আটজনই একই সাথে ক্যান্টিনে যাই। মাঝে মাঝে হয়তো বিজনেস ট্রিপে কেউ বাইরে গেলে, বাকীরা এক সংগেই পাশাপাশি আর সামনা সামনি টেবিলে বসেই গলপো গুজব আর হাসি আনন্দের মাঝেই লাঞ্চটা সারি। সংগত কারনেই সেলস অফিসের সবাই একটু বেশী কথাই বলে। আর বেশী কথা বলতে পারাটাই সেলসম্যানদের জন্যে গুরুত্বপূর্ন এবং প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। নইলে কাষ্টোমারদের মন জয় করে, পন্য বিক্রয়ের কাজটিও সম্ভব না। তবে, প্রকৌশলী হিসেবে আমি ততটা কথায় পারদর্শী না। তাই,লাঞ্চের সময় চুপচাপ থেকে, সবার কথা শুনাটাই বোধ হয় আমার একট কাজ হয়ে দাঁড়ায়।


সেদিন আমাদের টীমের অধিকাংশই বিজনেস ট্রিপে বাইরে ছিলো। লাঞ্চের সময় মাত্র তিন জনের একটা গ্রুপই ক্যান্টিনের একটা খালি টেবিলে গিয়ে বসেছিলাম। সব সময় যেখানে আট জন একটা বিশাল জায়গা দখল করে রাখি, সেদিন আমাদের আশে পাশের চেয়ারগুলো খালিই পরেছিলো। আর দূর থেকে তা দেখেই বোধ হয়, শুভ্রা ঠিক কামালের সামনা সামনি চেয়ারটাতে এসে বসলো। আমি কামালের পাশেই বসেছিলাম। তাইকোনাকোনি বসা শুভ্রার দিকে দিকে ভীরু ভীরু চোখেই বার কয়েক তাঁকিয়ে নিজ খাবারে মন দিলাম।


শুভ্রা কামালের সাথেই এটা সেটা কথা বার্তা চালিয়ে যাচ্ছিলো। এবং এক মুহুর্তে আমার কথাও জিজ্ঞাসা করলো, উনি কি নুতন?
আমি আঁড় চোখেই একবার তাঁকালাম শুভ্রার দিকে। কারন, তার দিকে সারসরি খুব বেশীক্ষণ তাঁকিয়ে থাকা যায়না। যৌন উন্মাদনায় ভরা একটি চেহারা! সুন্দর লোভনীয় সাদা দাঁতের হাসি। এমন একটি মেয়ের পোষাকের আড়ালে কি কি থাকতে পারে, তা জানার আগ্রহটাই মনের মাঝে ভীর করতে থাকে। তারপর আবারও খাবারে মন দিলাম। কামালই উত্তর দিলো, না, নাগপুর অফিসে দীর্ঘদিন ছিলো। এখানে বদলী হয়েএসেছে।
শুভ্রা চোখ কপালে তুলেই বললো, হেড অফিস? আমারও ঠিক তাই মনে হয়েছিলো। হেড অফিসের মানুষগুলো একটু অহংকারীই মনে হয়!
শুভ্রার কথা শুনে, আমি আর চুপচাপ থাকতে পারলাম না। বললাম, আমাকে কি খুব অহংকারী মনে হয়?
শুভ্রা রিনিঝিনি সুরেই হাসলো। তারপর বললো, হুম, সেই সাথে হাবাও মনে হয়!
শুভ্রার কথা শুনে সবাই অট্টহাসিতেই ফেটে পরলো।

কেনো যেনো মনে হতে থাকলো, আমাকে এক ধরনের উপহাসই করতে চাইছে সবাই মিলে। আমি বললাম, আপনি বুঝি খুব চালাক?
শুভ্রা খিল খিল হাসিতেই ভেঙে পরলো। তারপর বললো, ওমা মাইণ্ড করলেন মনে হয়?
তারপর, কামালকে লক্ষ্য করে বললো, উনি হাসি ঠাট্টা বুঝে না?


কামাল আমার দিকে খুব তীক্ষ্ম চোখেই তাঁকালো। তার চাহনি প্রকাশ করলো যে, বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে! ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সংস্কৃতি, সেলস বিভাগে অচল। হাসি ঠাট্টাই হলো সেলস বিভাগের পরম ঐতিহ্য! অথচ, হঠাৎ করে হাসি ঠাট্টা করার মতো কোন কথাও খোঁজে পেলাম না। তাই আবারও নিজ খাবারে মন দিলাম। আর মনের মাঝে কল্পনায় আঁকতে থাকলাম, শুভ্রার এই চমৎকার দেহটার নগ্ন একটা রূপ! শুভ্রা নিজে থেকেই বললো, স্যরি, হাবা বলাতে। আসলে, জ্ঞানীদের সব সময় বোকা বলেই মনে হয়! আপনি তো তাদের দলেই!
আমি হাসলাম। বললাম, আমি জ্ঞানী নই। খুবই সাধারন মানুষ।
শুভ্রা আবারও খিল খিল করে, রিনি ঝিনি সুরে হাসতে থাকলো। হাসলে এই মেয়েটিকে এত সুন্দর লাগে কেনো? আমি খাবারের ফাঁকেই শুভ্রার চমৎকার হাসিটা উপভোগ করতে থাকলাম। শুভ্রা হাসি থামিয়ে বললো,যাক বাবা, বাঁচা গেলো। আমি তো ভেবেছিলাম, নাগপুরের নাগরাজাই বুঝি এসেছে।


মানুষ বোধ হয় খুব সহজেই অভিযোজন করে, যে কোন পরিবেশেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এতদিনের নাগপুরের পরিবেশ আর বর্তমান শরৎগঞ্জের পরিবেশ পুরুপুরি ভিন্ন। আমি শরৎগঞ্জের পরিবেশের পাশাপাশি,সেলস অফিসের মানুষগুলোর চিন্তাভাবনার সাথেও নিজেকে খাপ খাইয়ে নেবার চেষ্টা করলাম। হঠাৎ কেনো যেনো নিজেও অট্টহাসিতে ফেটে পরলাম! তারপর হাসি থামিয়ে বললাম, নাগ রাজা! নাগ রাজা! হা হা হা...... নাগ কন্যা পেলে তো ভালোই হতো!
আমি জোর করে হলেও হাসি ঠাট্টার একটা পরিবেশ তৈরী করতে চাইলাম ঠিকই। তবে, শুভ্রাও কোন নাগ কন্যার চাইতেও কম নয়। নাগ কন্যার মতোই ছিপছিপে একটা দেহ, ভারী পাছা, সুউন্নত বক্ষ! হাসলে,মুক্তো ঝরা দাঁতগুলো মাতাল করে তুলে। এমন একটি মেয়ের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পরতে কারই না ইচ্ছে হবে!
ছোট খালা তো সেদিন আমার বিয়ের কথাই বলছিলো। বলেছিলো, তার সন্ধানে নাকি পাত্রীও আছে। চোখের সামনে শুভ্রার মতো এমন একটি শুভ্র মেয়ে থাকতে, ছোট খালার পরিচয় করিয়ে দেয়া কোন এক মেয়ের সাথে পরিচিত হয়ে লাভ কি? মনে মনে স্থির করে নিলাম, শুভ্রাই আমার জন্যে উপযুক্ত একটি পাত্রী! এমন একটি মেয়ে নিজ ঘরে থাকলে, ঘরটা যেমনি দিন রাত উজ্জ্বল থাকার কথা! তেমনি, রাতের বেলায় বিছানাতে আনন্দ আনন্দেই সময়ের পর সময় কাটিয়ে দেবার কথা। আমি ক্ষণে ক্ষণে খুব কাছাকাছি থেকে শুভ্রার চেহারা আর তার দেহটাই পর্য্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। শুভ্রাও বোধ হয় সেটা অনুমান করতে পারলো। সে অন্য কেউ না বুঝে মতোই, খানিকটা চোখ লাল করার মতোই ভঙ্গি করে বিড় বিড় করে বললো, এমন ছোবল মারবো!
আমি মনে মনেই বললাম, সেটাই তো চাইছি। তবে, মুখে কিছু বলতে পারলাম না।

সেদিনও নুতন একটা বাসা খোঁজার খাতিরেই, দুপুরের পরপরই অফিস থেকে বেড়িয়ে পরলাম। বাসা খোঁজা কতটা ঝামেলার তা আমার সত্যিই জানা ছিলো না।। তার কারন হলো, এবারের মতো বরাবরই বাসা খোঁজার দায়ীত্বটা অন্যদের উপরই দিয়ে রাখতাম। তারা কিভাবে কত কষ্ট করে আমার জন্যে আমার জন্যে একটা বাসা খোঁজে ঠিক ঠাক করে রাখতো, তা আমার ধারনার বাইরেই ছিলো। অথচ, বরাবরই আমি শুধু খুব সহজ করেই নুতন বাসাটা পেয়ে, সাজিয়ে নিতাম নিজের মনের মতো করেই। সেবার বাসা খোঁজতে গিয়ে, সত্যিই সেসব বন্ধু কিংবা আত্মীয়দের প্রতি মনে মনে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ছাড়া বোধ হয়,আন্য কোন পথই দেখলাম না।

শেষ পর্য্যন্ত একটা বাসা খোঁজে পেলাম, খুবই কাকতালীয় ভাবেই। আমার ভাগ্যটা বরাবরই খারাপ থাকে। তবে, মাঝে মাঝে এমনিই সুপ্রসন্ন হয়ে উঠে যে, নিজেকেই তখন বিশ্বাস করতে পারিনা। অভিজাত একটি আবাসিক এলাকাতে, বিশাল একটা ভবনই বলা চলে। অথচ, ভাড়া সত্যিই নাম মাত্র! তার কারন বাড়ীওয়ালা তার পরিবার এর সবাইকে নিয়ে লণ্ডনে থাকে। বাড়ীটা দেখাশুনার মতো কোন মানুষই নেই। কেউ থাকলে হয়তো, বাড়ীটা খানিকটা পরিচর্য্যা পাবে, তার জন্যেই নাম মাত্র ভাড়া। সেই মধ্যস্থতাকারী লোকটাও বোধ হয়, তেমনি হন্যে হয়ে একজন ভারাটে খোঁজছিলো। অনেকটা ক্লান্ত হয়ে, চায়ের দোকানে চা পান করতে গিয়েই লোকটার সাথে পরিচয় হয়েছিলো। আমি খুব আনন্দিত হয়েই মধ্যস্থতাকারীর সাথে একটা চুক্তি করে এডভ্যান্সও করে ফেললাম। কেনোনা, একদিন আগে হলেও, ছোট খালার বাসাটা আমাকে ত্যাগ করতেই হবে। নইলে, মোহনার সাথে যে কোন একটা অঘটন না ঘটিয়ে নিস্তার পাবো না বলে মনে হচ্ছিলো।


অনেকটা আনন্দে, অনেকটা ক্লান্তিতে, ছোট খালার বাসায় ফিরে এলাম, বিকাল চারটার দিকেই। অনেকটা স্বস্তি নিয়েই ছোট খালার বাসার গেটটা ঠেলে উঠানে পা দিয়েছিলাম। যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই তো রাত হয়! উঠানে পা দিয়েই চোখে পরলো, মোহনা উঠানেই। ওপাশে একটা চেয়ারে একাকী উদাস মনেই বসে আছে।
মোহনার পরনে রঙীন জংলী ছিটের বেশ ঢোলা একটা নিমা! এমন একটি পোষাক পরার চাইতে না পরাই বোধ হয় অনেক উত্তম। কেননা ঢোলা এই নিমাটি তার দেহের যে অংশটা ঢেকে রাখার কথা, সেই অংশটাই শুধু ঢেকে রাখতে পারছিলো না। ঘাড়ের দিকটায় সরু স্টাইপ ছড়িয়ে, গলের দিকটা যেমনি অধিকাংশ প্রশস্ত হয়ে সুডৌল বক্ষ দুটিকে উন্মুক্ত করে রেখেছে, বগলের দিকটাতেও তেমনি অধিকাংশ উন্মুক্ত। দুই ঘাড়ের দিক থেকে নেমে আসা সরু স্ট্রাইপটা, বৃহৎ বক্ষ যুগলের বৃন্ত প্রদেশ দুটিই যেনো ঢেকে রাখা যায়, তেমনি করেই যেনো স্তন চূড়ার দিকটাতে এসে খানিকটা প্রসস্ত হয়ে, গলের দিকটাতে মিলিত হয়েছে। অন্য কথায় বলতে গেলে, এমন একটি নিমাতে, মোহনার লোভনীয় সুডৌল স্তন জোড়া গলের দিকে উপরের অংশটা যেমনি পুরুপুরিই উন্মুক্ত করে রেখেছে, ঠিক তেমনি বগলের দিকে পার্শ্ব দিকটাও পুরুপুরি উন্মুক্ত! শুধুমাত্র পেটটাই যেনো ঢেকে রেখেছে। তার স্তনের আকৃতি, আয়তন পুরুপুরিই চোখে পরে। তেমনি একটা নিমা পরা মোহনাকে দেখে, আমার ক্লান্ত দেহেরও শিরা উপশিরার রক্তগুলো উষ্ণ আর সতেজ হয়ে উঠলো। মোহনা আমাকে দেখে সহজ গলাতেই বললো, ভাইয়া, এত তাড়াতাড়ি!

এই কয়টা দিনে মোহনার সাথে অনেক সহজই হয়ে এসেছিলাম। অথচ, এমন একটি উৎকট পোষাকের মোহনার দিকে খুব একটা বেশী সময় তাঁকাতে পারলাম না। আমি অন্যত্র তাঁকিয়েই বললাম, আর বলো না! ওই যে বললাম না, বাসা খোঁজার কথা! তাই অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়িই বেড়িয়ে পরেছিলাম।
মোহনার কি হলো বুঝলাম না। সে চেয়ারটা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্কভাবেই হাঁটতে থাকলো উঠানে। তারপর ওপাশের প্রাচীরটার উপরই বাম কনুইটা রেখে, বাম হাতের তালুতে গালটা ঠেকিয়ে, আভিমানী গলাতেই বললো, খোঁজে পেলেন?
মোহনার মনের অবস্থা আমি বুঝতে পারছিলাম। তারপরও, তার নিমার গল দিয়ে ভেসে আসা পূর্ণ নগ্ন বক্ষ যুগল আমাকে যেনো অস্থির করেই তুলতে থাকলো। এমন পোষাক আর এমন ভঙ্গীতে মোহনাকে দেখে, মনে হতে থাকলো, নুতন একটা বাসা খোঁজে পাওয়া বোধ হয় আমার জন্যে খুব জরুরীই ছিলো। আমি বললাম, হুম! অনেক কষ্টে! কাকতালীয় ভাবে! সে এক মজার কাহিনী! আমি তো ক্লান্ত হয়ে ফিরেই আসতেচেয়েছিলাম। ফেরার পথে এক দোকানে বসে চা খাবার কথাই ভাবছিলাম। ঠিক তখনই এক লোক বললো, আপনি কি বাসা খোঁজছেন?
মোহনা রাগ করেই বললো, থাক থাক! আপনার মজার গলপো শুনার কোন ইচ্ছে নেই আমার। চলে যাইতে চাইছেন যান। আপানাকে কি কেউ আর রশি দিয়ে বেঁধে রাখতে চাইছে নাকি?
মোহনার কথায় আমার বুকটা হঠাৎই কেমন যেনো হু হু করে উঠলো। বলার মতো কোন ভাষাই খোঁজে পাচ্ছিলাম না।
মায়া মমতাগুলো খুব সহজেই মানুষকে দুর্বল করে ফেলে। আমার প্রায়ই মনে হয়, পৃথিবীতে কিছু কিছু ঘটনা না ঘটলেও পারে। অথবা, মানুষের জীবনে সাময়িকভাবে কিছু কিছু মানুষের দেখা সাক্ষাৎ না হলেও ভালো হতো! তারপরও, মানুষের জীবনে নিজের ইচ্ছা না থাকাও স্বত্তেও অনেক ঘটনার যেমনি সূত্রপাত হয়, সাময়িক অনেক মায়ার বন্ধনও গড়ে উঠে। আবার সেসব মায়া মমতার বন্ধনগুলো ছিন্নও করে ফেলতে হয়।


সত্যি কথা তো এটাই! এই কয়টা দিনে মোহনার যৌন জ্বালাতন যতটা পেয়েছি, তার থেকে বাঁচার জন্যেই তো, শরৎগঞ্জ উপশহরের বাসাটা ঠিক ঠাক করে ফেলেছিলাম। পুরনো বাড়ী, ভাড়াটাও কম। তারপরও পছন্দ হয়েছিলো বলেই নয়, ছোট খালার ছোট বাসাটা থেকে মুক্তি পাবার জন্যেই শুধু নয়, মোহনার যৌন বেদনাময়ী দেহটার জ্বালাতন থেকে বাঁচার জন্যেই, সিদ্ধান্তটা হঠাৎ করেই নিয়ে ফেলেছিলাম। তা ছাড়া, ছোট খালুও আকার ইংগিতে প্রকাশ করেছিলো, খুব বেশীদিন যেনো তাদের বাসায় না থাকি। ছোট খালা কিংবা মোহনা নগ্নতাগুলোকে অতটা গভীর ভাবে না ভাবলেও, ছোট খালুর মতো মানুষগুলো হয়তো ভিন্ন কোন কোণ থেকেই ভাবে। অথচ, এতে করে মোহনার মনটা এতটা খারাপ হয়ে যাবে, ভাবতেও পারিনি। আমি চুপচাপই দাঁড়িয়ে রইলাম শুধু।

মোহনার মন খারাপের ব্যাপারগুলো বোধ হয় খুব বেশীক্ষন স্থায়ী থাকে না। এ ব্যাপারে পৃথিবীর সমস্ত সুন্দরী মেয়েগুলোই বোধ হয় একই রকম। আমার প্রায়ই মনে হয়, যার সম্পদ থাকে, তার সেই সম্পদের কথা কোন না কোনভাবে সবাইকে প্রকাশ করার ইচ্ছাবোধ করে। এটা মানুষের স্বভাবজাত একটি দিক। জীবনে কোন বিজয়ের কথা থাকলে, কিংবা সম্পদ এর মালিকানা পেয়ে থাকলে, কথা প্রসংগে কোন না কোন ভাবেমানুষ তা প্রকাশ করে থাকেই।
মেয়েদের জন্যে সুন্দর চেহারা যেমনি একটি পরম সম্পদ, বক্ষও একটি মহা মূল্যবান সম্পদ। সব মেয়েদের বক্ষই কম বেশী উন্নত থাকে। তবে, সবার বক্ষই একই হারে যেমনি উন্নত হয়ে উঠেনা, ঠিক তেমনি সবার বক্ষ দেখতেও একই রকম নয়। সুউন্নত, সুডৌল বক্ষের বাড়তি একটা মর্যাদা বোধ হয় সবার কাছেই আছে। সেই সাথে সুন্দর মিষ্টি চেহারা যদি থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা! মোহনাও বোধ হয় সেটি জানে। আর তাই সে, খুব অকৃপণ হয়েই, তার সেই মহা মূল্যবান সম্পদটুকু প্রকাশ করারই পায়তারা করছিলো। সে তার দেহটাকে দুলিয়ে দুলিয়ে, নিমার গলে প্রকাশিত হয়ে থাকা চমৎকার বক্ষ দুটিই দুলিয়ে দুলিয়ে আমাকে শুধু অভিভূতই করতে থাকলো। তারপর বললো, তাহলে চলেই যাবেন!
আমি বললাম, চলে আর কত দূরই যাবো! শরৎগঞ্জ তো পাশেরই শহর! এক ঘন্টারও পথ না। সময় হলে যখন তখনই চলে আসবো তোমাকে দেখতে!
আমার কথা শুনে মুচকি হাসলো শুধু মোহনা। কিছু বললো না। প্রাচীর এর উপর থেকে কনুইটা সরিয়ে নিয়ে সোজা হয়েই দাঁড়ালো। তারপর আনমনেই এগুতে থাকলো উঠানের সবুজ ঘাসগুলোর উপর দিয়ে।


উঠানে খুব সহজভাবেই চলাফেরা করছে মোহনা। আমিও তার পাশাপাশি হেঁটে হেঁটে, কথা বলার চেষ্টা করছিলাম এটা সেটা। ফাঁকে ফাঁকে, তার অধিকাংশই উন্মুক্ত বক্ষের সৌন্দর্য্যই শুধু উপভোগ করছিলাম। সেই সাথে আমার প্যান্টের তলায় লিঙ্গটাও অদ্ভুত যৌনতার চাপে ছটফটই শুধু করছিলো। অথচ, মোহনা আমার কথা শুনছে কি শুনছে না কিছুই অনুমান করতে পারলাম না। মোহনা হঠাৎই ক্লান্তির একটা ভাব নিয়ে, উঠানের সবুজ ঘাসের গালিচার উপর বসে পরলো। খানিকটা ঝুঁকে বসে, নিমার গলে তার পূর্ণ নগ্ন বক্ষগুলো প্রকাশিত করেই বললো, আমাকে দেখতে চলে আসবেন? কি দেখবেন?
সুন্দরী মেয়েগুলো এত প্যাচিয়ে কথা বলে কেনো? তাই তো? মোহনাকে দেখতে আসবোই বা কেনো? এলেই বা কি দেখবো মোহনার? সুন্দর মিষ্টি শিশু সুলভ চেহারাটা? নাকি, তার হঠাৎ বেড়ে উঠা আস্বাভাবিক বৃহৎ বক্ষ! তা যদি দেখার এতই আগ্রহ থাকতো, তাহলে এত হন্যে হয়ে নুতন একটা বাসা খোঁজতে গেলাম কেনো? মোহনার প্রশ্নের সঠিক কোন জবাব আমি দিতে পারলাম না। আমতা আমতা করেই বললাম, না মানে,খালাকে দেখতে আসবো। সেই সাথে তোমার সাথেও যদি দুটু আলাপ হয়, তাতে মন্দ কি?

অল্প কয়দিনে মানুষকে আর কতটা বুঝা যায়। এই অল্প কয়দিনে মোহনার মতো একটি মেয়েকেও বুঝার কোন উপায় ছিলো না। সে আমার কথা আর চেহারার ভাব ভঙ্গী দেখে খিল খিল করেই হেসে উঠলো। তারপর বললো, বাব্বা, বাঁচা গেলো! ভেবেছিলাম আমার দুধুগুলোই বুঝি দেখতে আসবেন!
আমি মজা করার জন্যেই বললাম, তোমার দুধু দেখার জন্যে কি দূর দুরান্ত থেকে কেউ আসে নাকি?
মোহনা তার হাত দুটি সবুজ ঘাসের উপর রেখে, হাঁটুতে ভর করে উবু হয়ে, বক্ষ যুগল ভুমির সমতলেই ঝুলিয়ে রেখে পুরুপুরিই প্রকাশিত করে বললো, না, এখন পর্য্যন্ত কেউ আসেনি। তবে, ভেবেছিলাম, আপনি অন্তত আসবেন!
আমি চোখ কপালে তুলেই বললাম, তোমার এমন মনে হবার কারন?
মোহনা বললো, তা জানিনা! আপনার ভাব সাব দেখে মনে হয়, আপনি গভীর জলেরই মাছ! এত সহজে আপনাকে পটানো যাবেনা, তা আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি। তবে কিভাবে পটাতে হবে, সেই কৌশলও আমি জানি!

অফিসে শুভ্রার প্রেমেও আমি হাবুডুবু খাচ্ছিলাম। শিউলীও আমার মনে কম জায়গা করে নেয়নি। এদিকে ছোট খালার সাথেও হঠাৎ করে একটা গোপন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, নিজেদের অজান্তেই। মোহনার সাথে বিপজ্জনক কোন সম্পর্ক গড়ে তোলার মোটেও কোন সদিচ্ছা আমার নেই। আমি বললাম, কি এমন কৌশল তুমি জানো?
মোহনা বললো, এখন বলা যাবে না। সময় হলেই টের পাবেন।


মোহনার সাথে আর বেশী কথা হলো না। আমি বললাম, তুমি খেলা করো। আমি খুব টায়ার্ড!
এই বলে আমি এগিয়ে গেলাম ঘরের ভেতরই। প্রস্তুতি নিতে থাকলাম নুতন বাসায় যাবার জন্যেই। ছোট খালাকেও জানলাম সব কথা তার শোবার ঘরে গিয়েই। কলেজ শিক্ষিকা ছোট খালা বাস্তববাদীর মতোই বললো,এলি তো এলি, আমাকে কয়েকটা দিন জ্বালিয়েই গেলি। যাবি তো যাবি, মাঝে মাঝে আগুন নেভানোতেও আসবি কিন্তু!


রাতে মোহনার সাথেই একই বিছানায় ঘুমিয়েছিলাম। হাত পা ছুড়ে ঘুমানো মোহনা, কেনো যেনো এক কাতেই ঘুমালো সারাটা রাত। সকালবেলায় আমার ঘুমটা ভাঙলেও, মোহনার ঘুমটা তখনো ভাঙেনি। ঘুম থেকে উঠে, নাস্তাটা সেরেই বিদায়ের পালা। আমি মোহনার ঘর থেকে বেড়িয়ে হাত মুখটা ধুয়ে নাস্তার টেবিলেই গেলাম।
ছোট খালা কিংবা খালুজান যতটা সহজভাবে আমাকে বিদায় দিতে পারলো, মোহনা বোধ হয় এত সহজে বিদায় জানাতে পারলো না। বিদায়ের প্রাক্কালে মোহনাকে এত ডাকাডাকি করলাম, অথচ মোহনা নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করেই বসে রইলো। অগত্যা, মোহনার সাথে শেষ সাক্ষাৎটুকু ছাড়াই বিদায় নিতে হলো।
(চলবে)
http://www.amazingadda.com/showthread.php/212198

0 comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...