25 June 2012 - 0 comments

মোহনা ৭

সিকদার অনি

নুতন বাসায় জীবন শুরু হলো শুন্য থেকেই। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষ যা দরকার, তাতো কিনতেই হবে! যেমন, খাট বিছানা, চাল চূলু! আমি সেই চাল চূলু কেনার জন্যেই শপিং সেন্টারে গিয়েছিলাম। বিশাল বেডিংটা কোলে নিয়ে আর কিছু কেনা কাটা হাতে নিয়ে একটা রিক্সায় উঠতে যেতেই মেয়েলী একটা কন্ঠ শুনতে পেলাম। আমি রিক্সার সীটের উপরই বেডিংটা ঠেকিয়ে ধরে পেছনে তাঁকালাম। অবাক হয়েই দেখলাম শিউলী। সে খানিকটা এগিয়ে এসে, খুব মিষ্টি করেই হেসে বললো, এত বড় বেডিং নিয়ে কোথায় চললেন?
দীর্ঘাঙ্গী শিউলীর পরনের পোষাক বরাবরই খুব ফরমাল, পরিপাটি। হঠাৎ দেখলে ইউরোপীয়ান বংশোদ্ভূত কোন কন্যা বলেই মনে হয়। চলাফেরাও অনেকটা বুক টান টান করা। তাই সুউন্নত বক্ষযুগলই প্রথমে চোখে পরে। তারপর হলো চমৎকার ঠোট যুগল সহ টানা টানা দুটি চোখ। খানিকটা ক্ষণ তার দিকে অর্থহীন দৃষ্টিতেই তাঁকিয়ে থেকে, আমি খানিকটা ভণিতা করেই বললাম, আপনি কি আমাকে চেনেন?
শিউলী খানিকটা রাগ করেই বললো, সিকদার ভাই, আপনি কি আমার সাথে ফান করছেন?
আমি কি বলবো বুঝতে পারলাম না। ফ্যাল ফ্যাল করে আরো খানিকটা ক্ষন তাঁকিয়ে রইলাম, আধুনিকা এই মেয়েটার দিকে।
শিউলী নিজে থেকেই বললো, আপনি আমাকে না চিনলেও, আমি আপনাকে ভালো করে চিনি। নাতাশা আর আমি একই সংগে জয়েন্ট করেছি। নাতাশা! হেড অফিসে মার্কেটিং বিভাগের নাতাশা! আপনার কাছে ট্রেইনী হিসেবে ছিলোনা?
আমি লাজুক চেহারা করেই বললাম, ও আচ্ছা! কি নাম আপনার?
শিউলী বললো, শিউলী। এত্ত বড় বেডিং কোলে নিয়ে, যেভাবে রিক্সায় উঠছেন, মনে তো হচ্ছে এটাই আপনার নুতন বউ!
আমি বললাম, নুতন সংসার! বেডিং লাগবে না!
শিউলী বললো, বিয়ে করেছেন নাকি? কই শুনিনি তো!
শিউলীর কথায় আমি নিজেই যেনো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। কি বুঝাতে চাইলাম আর বুঝলোই বা কি? অথচ, আমি কিছু বলার আগেই, শিউলী বলতে থাকলো, আর শুনবোই বা কেমন করে! নাতাশা যেভাবে দীর্ঘদিনের জন্যে ছুটি নিয়ে নিলো!
শিউলী আবারও খানিকটা থেমে বললো, আমার গাড়ী আছে। আপত্তি না থাকলে আপনাকে পৌঁছে দিতে পারি। কোথায় যাবেন?
আমি বললাম, উপশহর, রোড নম্বর ছয়।
শিউলী অবাক হয়েই বললো, এতো দেখছি আমাদের পাশের গলি! অথচ, আমি জানিনা! আসুন আসুন! গাড়ীতে উঠুন!
আমি যেনো হঠাৎই বোকা বনে গেলাম। অনেকটা বোকার মতোই রিক্সা থেকে নেমে, শিউলীর পেছনে পেছনে, রাস্তার ধারে পার্ক করা তার গাড়ীটার কাছেই এগিয়ে গেলাম। রিক্সাওয়ালা কি ভাবলো আর না ভাবলো, সেদিকে মোটেও মন ছিলো না। পেছনের সীটেই বেডিংটা ঠেলে ঢুকিয়ে, সামনে শিউলীর ড্রাইভিং সীটের পাশেই বসলাম। গাড়ী চালাতে চালাতেই শিউলী বললো, শেষ পর্যন্ত কাকে বিয়ে করলেন?
আমি বললাম, কিসের বিয়ে?
শিউলী বললো, ঐ যে বললেন? নুতন সংসার!
আমি বললাম, বিয়ে না করলে কি নুতন সংসার করা যায়না? নাগপুর থেকে বদলী হয়ে এলাম! নুতন করে আবার সংসার সাজাতে হবে না!
শিউলী বললো, ও, তাই বলেন!


অনেকটা ক্ষণ কথাবার্তাহীন ভাবেই চললো। হঠাৎই নাতাশার কথা খুব জানতে ইচ্ছে হলো। একটা সময়ে নাতাশাও বদলী হয়ে শরৎগঞ্জে এসেছিলো। এবং আমার বর্তমান টীমেরই একজন কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলো। অথচ, হঠাৎ করে দীর্ঘদিন ধরেই ছুটিতে আছে, সে কথা আমার কানেও এসেছিলো। আমি বললাম, নাতাশার আসল ব্যাপারটা কি? এতটা দিন ছুটি!
শিউলী বললো, কারন তো আপনিই ভালো জানেন! সহজ সরল মেয়েটা একই সাথে এতগুলো কষ্ট সহ্য করার কি উপায় থাকে! আপনিও তো কিছু করলেন না।
আমি বললাম, যতদূর শুনেছিলাম, নাতাশা শরৎগঞ্জে আসার কিছুদিন পরই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলো। তার কারন আসলে আমার জানা ছিলো না। বরং নাতাশা বদলী হবার পরই, আমি সাংঘাতিক কষ্ট পেয়েছিলাম। এমন কি, নিজ কাজেও মন বসতো না। সারাক্ষন, অমনোযোগী হয়েই অফিসে সময় কাটাতাম। যার প্রতিফলই ছিলো, আমার এই কোম্পানীর রাজনৈতিক শাস্তি! ডিপার্টমেন্ট বদল সহ, স্থান এরও বদল। আমি অবাক হয়েই বললাম, কই, কিছুই তো জানিনা। এখন থাকে কোথায়?
শিউলী বললো, মায়ের সাথেই দেশের বাড়ীতে আছে। নাগপুরে থাকার খুব শখ ছিলো মেয়েটার!

শিউলী বললো, সিকদার ভাই বসেন। আমি পোষাকটা একটু বদলে আসি।
এই বলে শিউলী ভেতরের ঘরের দিকেই এগিয়ে গেলো। আমি একা একাই খানিকটা ক্ষণ কাটালাম। শিউলী ফিরে এলো বেশ খানিকটা পরই, সাদা রং এর দীর্ঘ নাইলনের একটা ড্রেসিং গাউন পরেই। খুবই পাতলা বলে, দেহের কোথায় কি আছে সবই চোখে পরে। নিম্নাংগে সাদা প্যান্টটার অস্তিত্ব চোখে পরলেও, উর্ধাংগে ব্রা জাতীয় কোন পোষাকের আবরন নেই। দীর্ঘাংগী শিউলীর পোষাকের আড়ালেও বক্ষ দুটি অনুমান করা যায়। তবে, পাতলা ড্রেসিং গাউনটার তলা থেকে ভেসে আসা, শিউলীর স্ফীত বক্ষ যুগল স্পষ্ট হয়ে চোখে পরা মাত্রই আমার লিঙ্গটা পরাৎ করেই চরচরিয়ে উঠতে থাকলো। শিউলী সহজ গলাতেই বললো, সিকদার ভাই, খাবার রেডী হতে, এখনো অনেক দেরী। চলেন, বাড়ীটা একটু ঘুরে দেখবেন।
শিউলী আমাকে নিয়ে এগুতে এগুতেই বললো, এই বাড়ীতে নিজ শোবার ঘরটা ছাড়া কোথায় কি আছে, আমি নিজেও জানিনা। আপনি আসাতে ভালোই হলো। নিজেরও একবার দেখাটা হয়ে যাবে।
শিউলী তখন আমাকে নিয়ে, বিশাল একটা কক্ষে ঢুকে বললো, এটা মা বাবার শোবার ঘর। অথচ, কেউ থাকে না।
আমি বললাম, মা বাবার সাথে লণ্ডনে থাকলে না কেনো?
শিউলী বললো, সে অনেক কথা! অন্যদিন বলবো।
শিউলী আমাকে নিয়ে এগিয়ে গেলো বাড়ীর বাইরে, অন্য একটা একতলা ভবনের দিকেই। এগুতে এগুতেই বললো, বাবার মাথায় যে কি ছিলো বুঝি না। এত বড় বাড়ী থাকতেও এই রুম গুলো কেনো বানিয়েছিলো জানিনা। মনে হয় নিজের মাঝে জমিদার জমিদার একটা ভাব ফুটিয়ে তুলার জন্যেই। ড্রাইভার, চাকর, লজিং মাষ্টার এদের জন্যেই করেছিলো। একটা সময়ে অনেকেই থাকতো। অথচ, এখন কেউই থাকে না। ড্রাইভও আমি নিজে করি। কাদের চাচা নিজেই রান্না বান্নাতে পটু বলে, কাজের লোকেরও দরকার হয় না।
এগুতে এগুতে একটা কক্ষের দরজা ঠেলেই ঢুকলো শিউলী। অনেকটা গুদাম ঘরের মতোই, এলোমেলো এটা সেটা এখানে সেখানে স্তুপ হয়ে পরে আছে। বেশ কয়েকটা গাড়ীর টায়ারও স্তুপ করে রাখা। শিউলী একটা স্তুপের উপর পাছা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, এটা বোধ হয় ড্রাইভার সাহেবেরই ঘর ছিলো।
আমি ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললাম। ভাবলাম, একই শহরে থাকার জায়গার অভাবে, কেউ কেউ ফুটপাতেও রাত্রি যাপন করে। আর এখানে কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিষ কি সুন্দর ঘরের ভেতর দিনের পর দিন ঘুমুচ্ছে।

শিউলী খুব আগ্রহ করেই ঘরটার ভেতর এটা সেটা খোঁজতে থাকলো। ছাদের সাথে ঝুলানো দুটি রশি দেখে বললো, এটা আবার কি? ড্রাইভার সাহেব কি ব্যায়ামও করতো নাকি?
এই বলে দু হাতে রশি দুটি চেপে ধরে, নিজ দেহটাও শুন্যের উপর দোলাতে থাকলো। আমি লক্ষ্য করলাম, পাতলা ড্রেসিং গাউনটার ভেতর থেকে শিউলীর বক্ষ যুগল আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গোলাকার বক্ষ যুগলের চূড়ায় গভীর কালচে বৃন্ত প্রদেশ দুটি মোহনীয় এক আবেশেরই সৃষ্টি করছে। তাৎক্ষনিক ভাবে আমি যেনো কেমন অভিভূত হয়ে পরলাম। এমন সুন্দর চেহারা, এত সুন্দর ঠোট, আর এত চমৎকার বক্ষের একটি মেয়েকে জীবন সংগিনী করে যদি কাছে পাওয়া যায়, তাহলে মন্দ কি?
শিউলী তার ঝুলাঝুলি শেষ করে বললো, চলেন, অন্য ঘরে যাই।

দুপুরের খাবারটাও ছিলো খুব রাজকীয়। এত আয়োজন এত প্রকার! অথচ, আমার কাছে তার চাইতেও লোভনীয় মনে হচ্ছিলো, সিলভীর ঠোট যুগল। আর তার স্ফীত সুদৃশ্য বক্ষ! সামনা সামনি বসা শিউলীর ঠোট এর নাড়া চাড়া দেখেই বুঝি, আমার ক্ষুধাটা আরো বেড়ে গেলো। থেকে থেকে শিউলীর ঠোটের দিকে তাঁকিয়ে, মাঝে মাঝে তার বক্ষের দিকেও আঁড় চোখ ফেলে, গোগ্রাসেই গিলতে থাকলাম সুস্বাদু খাবার গুলো।
রোমাঞ্চের সময়গুলো বুঝি সংক্ষিপ্তই হয়ে থাকে। শিউলীর সাথে আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক নয়, সাধারন পরিচিতা। দুপুরের খাবারের স্বার্থেই তাদের বাড়ীতে আসা। খাবার দাবার এর পরও টুক টাক গলপো হলো। তারপর, ফেরার পালাটাই ঘনিয়ে এলো।


আমার নুতন বাসাটাও খুব বিশাল! এই বাড়ীর মালিকও লণ্ডনে থাকে। এত বড় বিশাল বাড়ীতে ফিরে এসে, আমার মনটাও খুব ছটফট করতে থাকলো। ইচ্ছে করলো শিউলীকে মন প্রাণ দিয়েই ভালোবাসতে।
http://www.amazingadda.com/showthread.php/212198

0 comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...