08 May 2011 - 0 comments

অলীক চাওয়া (collected)

রাত এখন প্রায় সাড়ে আটটা। এই সময়ে দরজায় কলিং বেলের শব্দ শুনে একটু অবাক হলো তিয়াসা। সাধারনতঃ এসময় কেউ তার কাছে আসেনা। নিজেকে একবার আয়নায় দেখে নিল সে। ঢোলা স্লিভলেস গেঞ্জি আর বারমুডা পরে দরজা খোলাটা ঠিক হবে কি? তার উপর ভিতরে কোনো ইনারও পরেনি সে। ওদিকে হাউস কোট তিনটে ই আজ একসাথে কেচেছে বুলিদী। গায়ে একটা টাওয়েল চাপিয়ে আইহোলে চোখ রাখল সে। একটা চোদ্দ পনের বছরের বাচ্ছা ছেলে দাঁড়িয়ে। দরজা টা অল্প ফাঁক করে তিয়াসা জিজ্ঞাসা করলো,”কি চাই ?”

ছেলেটা তিয়াসার দিকে একঝলক তাকিয়েই থমকে গেল তারপর হাতজোড় করে বলল,”নমস্কার আন্টি। আমরা ওই ফ্ল্যাটে নতুন এসেছি। আজ ই। রত্না আন্টি বলেছিলেন চাবিটা আপনার কাছে রাখা আছে।”
মনে পড়ল তিয়াসার। আজ সকালেই রত্নাদি ফোন করে বলেছিল চাবিটা দিয়ে দেওয়ার কথা। রত্নাদিরা একমাস হলো ব্যাঙ্গালোরে শিফট হয়েছে। ফ্ল্যাট টা একেবারে ফাঁকা যাতে না থাকে তাই রত্নাদিদের দূর সম্পর্কের কোনো এক আত্মীয়কে ফ্ল্যাটটা ভাড়া দিয়ে রেখেছিল।”দাঁড়াও এক মিনিট। এনে দিচ্ছি।”
চাবিটা নিয়ে এসে ছেলেটিকে দিয়ে তিয়াসা বলল, “রত্নাদিকে একবার ফোন করে বলে দিও যে তোমরা চাবিটা পেয়ে গেছ।”
“নিশ্চই আন্টি। বাবা বলে দেবে। গুড নাইট।”
ঘুরে উল্টো দিকের ফ্ল্যাট এর কোলাপসিবল গেট এর তালা খুলতে লাগলো ছেলেটি। দরজা বন্ধ করলো তিয়াসাও। রাতের খাবার তৈরী হয়ে করে চাপা দিয়ে রেখে গেছে বুলিদী। ফ্রিজ খুলে একবার দেখে নিল তিয়াসা। কাল আসবেনা, কোথায় কোন দেবস্থানে পুজো দিতে যাবে তাই ডবলের ও বেশি রুটি ভাত আর দু-তিন রকমের তরকারী করে ফ্রিজ ভর্তি করে রেখে গেছে। ওফ, পারেও বটে এই মহিলা। ফ্রিজ থেকে একটা ভদকার বোতল আর ঠান্ডা জলের বোতল বের করলো সে। সঙ্গে সঙ্গে তার বুলিদির কথা মনে পরে গেল। “বাপের জম্মে দেখিনি বাবা, মেয়েমানুষেরা এসব ছাইপাঁশ গেলে। তাও আবার এইটুকু বয়সে।”
“কেন? এই বয়েসে ছেলেরা গিলতে পারে, আর মেয়েরা গিললেই দোষ ?”হেসে জবাব দিয়েছিল তিয়াসা।”আর তাছাড়া আমার বয়স কিছু কম না। আঠাশ চলছে।”
দক্ষিনের বারান্দায় গিয়ে তার প্রিয় বেতের চেয়ারে বসলো সে। সমস্ত বাড়ির মধ্যে এটাই তার প্রিয়তম জায়গা। তার অনেক কারণ আছে। আটতলার উপরে এই ব্যালকনির ঠিক নিচেই একটা বিশাল খেলার মাঠ। তারপর এলাকার সবার প্রিয় ঝিল। ইদানিং সেটাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আধুনিক সুদৃশ্য বাতিস্তম্ভের আলোয় ঝলমল করছে ঝিলের জল। সন্ধ্যায় প্রায় তিনঘন্টা এখানে একলা বসে থাকা তিয়াসার প্রিয়তম বিনোদন।
ভদকার গ্লাসে প্রথম চুমুক দিয়েই হঠাত তার উল্টোদিকের ফ্ল্যাটের ছেলেটার কথা মনে পড়ে গেল। ছেলেটা শুধুমাত্র একবার ই তার দিকে তাকিয়েছিল। নমস্কার করার সময়। বাকি পুরো সময়টাই সে মেঝের দিকে তাকিয়েছিল। তিয়াসা একবার নিজের দিকে তাকালো। তার পোশাক কি একটু বেশি খোলামেলা ছিল ? আচমকাই কারনটা উদ্ধার করলো তিয়াসা। গত সপ্তাহে কোনকিছুই শেভ করেনি সে। দরজার ছিটকিনি খুলে তাতে হাত রেখেই দাঁড়িয়ে ছিল আর জামাটা স্লিভলেস! অর্থাৎ তার ফর্সা এবং অনেকটা খোলামেলা শরীরের সাথে বগলের লোম দেখে সামলাতে পারেনি বেচারা। খুব ঘাবড়ে গেছে বোধহয় ছেলেটা। হাসি পেয়ে গেল তিয়াসার।
আঠাশ বছরের তিয়াসাকে প্রথম দর্শনে একুশ বছরের যুবতী মনে হওয়ায় স্বাভাবিক। তার নির্মেদ পাতলা ছিপছিপে গড়নের জন্য কলেজে প্রায়শই তাকে ছাত্রী ভেবে ভুল করে অনেকে। ফিলোজফির হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট শোভনাদি খুব রাশভারী। প্রথমদিন তিয়াসাকে দেখে প্রশ্ন করেছিলেন, “কোন ডিপার্টমেন্ট ?”
“ইংলিশ।”
“ক্লাস নেই? এখানে কি ?”
“মানে –?”তিয়াসা অবাক।
“কোন ইয়ার ? আগে তো দেখিনি।”
“আজ্ঞে –”
“ফার্স্ট ইয়ার বলেই তো মনে হয়। এখন থেকেই ক্লাস ফাঁকি ?”
শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়েছিল সুমনাদি। তিয়াসা লেকচারার – একথা শুনে শোভনাদির প্রায় অজ্ঞান হবার মত অবস্থা হয়েছিল। এখন অবশ্য শোভনাদি তাকে অসম্ভব ভালবাসেন। আর শুধু শোভনাদি কেন, দু-একজন বাদে সমস্ত স্টাফের সঙ্গেই তিয়াসার খুব ভালো সম্পর্ক। সময়ে সময়ে তাঁরা প্রায় তিয়াসার লোকাল গার্জেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
তিয়াসাকে চমকে দিয়ে বেজে ওঠে সেলফোনটা। রত্নাদি।”কিরে পাগলি, কি করছিস ? নিশ্চই বারান্দায় বসে গিলছিস ?”সেই চিরপরিচিত উচ্ছ্বাস।
“হুম, কি করে জানলে ?”
“তোকে আবার জানতে বাকি আছে আমার ?”হেসে বলল রত্নাদি।”কেন যে তোর এই অভ্যাস তা ছাড়াতে পারলাম না !”
“দুঃখ কর না রত্নাদি। এটা আমি ছাড়ব না। ও হাঁ, তোমার ফ্ল্যাটের চাবি হ্যান্ড ওভার করে দিয়েছি।”
“জানি, রাজা ফোন করেছিল।”
“রাজা ?”
“আমার ভাইপো। রাজার বাবা প্রশান্তদা মানে পমদা হলো আমার খুড়তুত দাদা।”
“প্লিজ রত্নাদি। তুমি জানো, এসব সম্পর্ক টম্পর্কর ব্যাপারে আমি খুবই কাঁচা।”
“ছেলেটাকে একটু দেখিস।”
“আমি ?”
“হ্যা, প্লিজ। আমার রিকোয়েস্ট।”
“তুমি তো জানো রত্নাদি, আমি খুব একটা –”
“লোক জনের সঙ্গে মেলামেশা পছন্দ করিস না। জানি।” তিয়াসাকে শেষ করতে না দিয়ে রত্নাদি বলে উঠলো, “আমি ওই ছেলেটার কথা বলছি। হি ইজ ভেরি আনফরচুনেট ইউ নো, কোনদিন মায়ের ভালবাসা পায়নি। ভীষণ লাজুক আর মুখচোরা।”
“ঠিক আছে, দেখব’খন।”
“কোনো প্রবলেম হলে একটু দেখিস – এই আর কি। পমদা মাসের মধ্যে পনেরদিন কলকাতার বাইরে থাকে, ছেলেটা একাই থাকবে তো, তাই বলছিলাম।”
“বললাম তো, চিন্তা করনা। কোনো প্রবলেম হলে জানাতে বোল। আমি কিন্তু যেচে কিছু জানতে যাব না।”
“ওক্কে, বলে দেব ডিয়ার।”
এই উটকো ঝামেলাটা অনভিপ্রেত। কিন্তু রত্নাদিকে না বলাটাও অসম্ভব। ফোনটা রেখে সেটা কাটাবার একটা উপায় ভাবছিল তিয়াসা। ঠিক কার কার কথা সে ফেলতে পারেনা, তার একটা তালিকা তৈরী করছিল মনে মনে। বাবা, মা, সোনাপিসি, মঞ্জুদি, রত্নাদি — নাহ, লিস্টে নাম বেড়েই চলেছে। ফোনটা তুলে নিয়ে নম্বর দয়াল করতে থাকে।
কাল সকালের ক্লায়েন্ট প্রেজেন্টেশন টায় শেষ বারের মত চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিল পার্থ। একটু পরেই তৈরী হয়ে পার্টিতে যেতে হবে, অলরেডি চারবার বসের ফোন এসে গেছে। আবার সেলফোনটা বেজে ওঠে একটু বিরক্তই হলো সে। তিয়াসা ! আনেক্সপেক্টেড ! এটা তিয়াসার ফোন করার সময় নয় তাছাড়া নিজে থেকে ফোনও করেনা তিয়াসা। ল্যাপটপের স্ক্রিন টা নামিয়ে রেখে ফোন ধরল পার্থ।”কি ব্যাপার ? মেঘ না চাইতেই জল ?”
“কেন? বৃষ্টি তোর ভাল লাগেনা বুঝি ?”
“আমার জীবন তো মরুভূমি ম্যাডাম। শুধু কাঁটাগাছ এ ভর্তি।”
“ক্যাকটাসের ফুল আমার ভীষণ প্রিয়। যাক গে, হঠাত তোর কথা মনে হলো তাই ফোন করলাম।”
“বাব্বাহ ! ভাবছি একটা লটারির টিকিট কাটি। আচ্ছা, আজ কি বস আমার প্রমোশন এনাউন্স করবে ?”
“থাম তো ! ফিরছিস কবে ?”
“পরশু।”
“ঠিক আছে, ফিরে জানাস। রাখছি।” ফোন কেটে দিল তিয়াসা।
তিয়াসা চিরকালই এমনি আনপ্রেডিক্টেবল। তার সঙ্গে তিয়াসার সম্পর্কের মতই। ক্লাস ইলেভেন থেকে ওরা বন্ধু তবু আজ তিয়াসাকে সম্পূর্ণ চিনে উঠতে পারল না পার্থ। আর পাঁচটা মেয়ের থেকে একেবারে আলাদা সে, সবকিছুতেই। আর সেইটাই বোধহয় ওর প্রতি পার্থর চিরকালীন আকর্ষণের সবচেয়ে বড় কারণ। তিয়াসার হাতে গোনা খুব কাছের বন্ধুদের মধ্যে সে একজন, তবুও যেন তারা দুজন একটা অদৃশ্য কাচের দেওয়ালের দুপাশের বাসিন্দা। দেখা যায় কিন্তু ছোয়া যায়না। ‘তোর জন্য একটা দারুন ভদকা কিনেছি। শনিবার আসছি। পারলে ফাকা রাখিস। ‘ – এই লিখে তিয়াসা কে একটা মেসেজ করলো পার্থ। তারপর বাথরুমে গেল ফ্রেশ হয়ে নিতে। ফিরে দেখল তার জন্য একটা রিপ্লাই। ‘আসিস,থাকব। ‘
পার্থ যখন ঢুকলো তখন পার্টি ফুল সুইং-এ। একে শনিবারের রাত তায় আবার ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্মদিন তাই খাদ্য পানীয় সবকিছুর ই অঢেল আয়োজন। তার ওপর ভিপি কে খুশি করতে আজ সবাই উপস্থিত। একটা হুইস্কির পেগ নিয়ে একটু আলো-আঁধারী তে একটা বসার জায়গা খুঁজে নিল পার্থ। এখান থেকে মোটামুটি সবাইকেই অবসার্ভ করা যাচ্ছে। নর্থ থেকে আসা আনন্দ কুয়াঁর মুম্বইয়ের মেহতার সঙ্গে আড্ডা জমাতে ব্যস্ত। ওর বোধহয় শিগগির ই একটা প্রমোশন চাই। নিজের মনেই হেসে ওঠলো পার্থ। এবার ও খুঁজতে লাগলো ইস্টার্ন বেল্ট থেকে আর কে কে এসেছে। গাঙ্গুলি, প্রতাপ, মহাজন আর মিস্টার য়্যান্ড মিসেস রায় অর্থাৎ রায় কাপল বা পার্থর ওপরওয়ালা এবং তার স্ত্রী। মিস্টার রায় সবেমাত্র মুম্বই থেকে কলকাতায় এসেছেন মাস খানেক হলো। পার্থর সঙ্গে ওনার আগেই আলাপ ছিল যা কয়েকগুন বেড়েছে গত একমাসে উনি ডিরেক্টর হয়ে আসার পর। খামখেয়ালী আর কাজপাগল লোকটাকে বেশ ভালো লাগে ওর। তবে মিসেস রায়কে এই প্রথম দেখল সে। বলতে দ্বিধা নেই, ভদ্রমহিলা রীতিমত সুন্দরী।”হেই চ্যাটার্জি, কাম, মিট মাই ওয়াইফ।” ওহ ভগবান, এই অন্ধকারেও ঠিক দেখতে পেয়েছে। বাধ্য হয়ে উঠে এলো পার্থ। প্রাথমিক পরিচয় আর নমস্কার বিনিময় সাঙ্গ হলো।”এত দেরী করলে কেন ? আই হ্যাভ বিন কলিং ইউ ফর অ লং টাইম।”
“আসলে স্যার ওই পরশুর প্রেজেন্টেসন টা ফাইনালি প্রিপেয়ার করছিলাম।”
“শোন, তোমাকে একটা হেল্প করে দিতে হবে। আমি আজ রাতেই হায়দ্রাবাদ যাচ্ছি। প্রতাপ আর গাঙ্গুলিও সঙ্গে যাবে। তুমি তো পরশু ফিরছ। প্লিজ টেক নিশা উইথ ইউ। ওকে আমাদের ফ্ল্যাট-এ পোঁছে দিও। ওর টিকিটও করা আছে, তুমি শুধু মনে করে ওটা অফিস থেকে তুলে নিও।”
ঢোক গিলে রাজি হলো পার্থ অবশ্য উপরোধে তো ঢেঁকিও গিলতে হয়। তাছাড়া না বলার কোনো উপায় ছিল না ওর।
পার্টি শেষ হতে বারোটা বাজলো। এয়ারপোর্ট ঘুরে হোটেলে পৌঁছতে পৌঁছতে একটা দশ। নিশা রায়ের ঘর ও এই হোটেলেই তবে তিনতলায়। এয়ারপোর্ট থেকে ফেরার সময় ভদ্রমহিলার সঙ্গে কথা বলে পার্থ জেনেছে নিশা রায় এর নিজের ক্যারিশ্মাও খুব একটা কম নয়। মিডিয়ায় নিয়মিত লেখালেখি করেন করেন তিনি। কর্পোরেট মহলেও অবাধ আনাগোনা আছে। সেক্স আর সেনসেক্স দুটো সম্পর্কেই ভদ্রমহিলা যথেষ্ট ইনফর্মড। পার্থকে কাল দুপুরে খাওয়ার অগ্রিম আমন্ত্রণ ও জানিয়ে রেখেছেন উনি। নিশা রায়কে গুড নাইট জানিয়ে পার্থ যখন ঘরে ঢুকলো তখন ঘড়িতে প্রায় দেড়টা। ইন্টারকমে ফোনটা এলো দুটো নাগাদ।
“ঘুমিয়ে পড়েছেন নাকি?”
“না, কে বলুন তো। ঠিক চিনতে পারলাম না।”
“এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন ? শুধু সেলসের ফিগার মনে রাখলেই চলে ?”
“– মানে?”
“নিশা রায় বলছিলাম।”
“ওহ ম্যাডাম, আয়াম রিয়েলি সরি।”
“বাট আয়াম হার্ট।” নিশা রায়ের গলায় অভিমানের সুর।”আপনার শাস্তি পাওয়া উচিত।”
“বেশ তো। আপনি দিন শাস্তি। মাথা পেতে নেব।”
“আমার রুম নাম্বারটা মনে আছে? নাকি সেটাও ভুলেছেন?”
“মনে আছে।” হেসে জবাব দিল পার্থ।
“খুব ঘুম না পেয়ে থাকলে একবার চলে আসুন না। কিছুক্ষণ আড্ডা মারা যাবে।”
“আসছি।”
রাত দুটোর সময় ফাইভ স্টারের রুমে ঘুম না আসার বিশেষ কোনো কারণ পার্থর মাথায় এলো না। তার যতদুর মনে পড়ছে নিশা রায় অন্তত তিনটে ড্রিঙ্কস নিয়েছিল। সে নিজেও অবশ্য তাই। সে যখন নিশা রায়ের ঘরে টোকা দিল তখন রাত দুটো। নিশা রায়ের তাকে বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন। এইঘরের তাপমাত্রা তার ঘরের থেকে অন্তত পাঁচ ডিগ্রী কম। নরম আলো আঁধারিতে একটা মায়াময় পরিবেশ। নিশা রায়ের পরনে সেমি-ট্রান্সপারেন্ট একটা নাইটি। ঘরের এই আবছা আলোতেও তার ভিতর দিয়ে অন্তর্বাস দৃশ্যমান। পার্থর অস্বস্তি বাড়ছে।”কিছু মনে করবেন না। আমি একটা ড্রিঙ্কস নেব। আপনি?”
“চলতে পারে।”
“আপনি নিশ্চই অবাক হচ্ছেন, তাই না?” হুইস্কি ঢালতে ঢালতে প্রশ্ন করলেন নিশা রায়।”এভাবে, এত রাতে আপনাকে ডেকে আনলাম। প্রায় জোর করে।”
পার্থ লক্ষ্য করছিল টেবিলে হুইস্কি ঢালার সময় নিশার নাইটির ফাঁক দিয়ে তার বুকের অনেকখানি উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে। নিশা একটা লেসের ব্রা পরে আছে সেটাও টের পেল পার্থ। তার সম্বিত ফিরল নিশার প্রশ্নের পুনরাবৃত্তিতে, “মিস্টার চ্যাটার্জি। আপনাকে বলছি।”
“হ্যা, বলুন।” পার্থ এবার বেশ অস্বস্তিতে।
“বোর করছি না আশা করি।” নিশা মুচকি হাসলেন। “এত রাতে আপনাকে ডেকে এনে।”
“না, না, একেবারেই না। ইটস মাই প্লেজার।”
গ্লাসটা এগিয়ে দিলেন নিশা রায় এবং পার্থর চোখ আবার হানা দিল দুই বুকের মাঝের বিপজ্জনক উপত্যকায়। আবার ও খিলখিলিয়ে হাসে উঠলেন নিশা রায়। পার্থ ঠিক করলো সে হারবেনা । গ্লাসে চুমুক দিয়ে সে এবার ঘরের চারিদিকে তাকাতে লাগলো। সুদৃশ্য পেলমেট, পর্দার কাপড়, টেবিল ল্যাম্পের শেড, ফলস সিলিং-এর খোপে বসানো মায়াবী আলো ছড়ানো বাতি; অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই সবটা মুখস্ত করে ফেলল সে।
“মিস্টার চ্যাটার্জি, লেট মি আস্ক ইউ অ সিম্পল কোয়েস্চেন।” আবার বলে উঠলেন নিশা রায়। “আমি কি যথেষ্ট এট্রাক্টিভ নয়? হোয়াট ডু ইউ থিন্ক?”
“কেন বলুন তো?” পার্থ একটু চমকালো।
“আপনি যেভাবে এ ঘরের আর সব কিছুর প্রতি প্রবল মনোযোগ দিচ্ছেন, তাতে আমার তেমনটাই মনে হচ্ছে।” উঠে দাঁড়ালেন নিশা রায়, তারপর নাইটির ফিতে টা খুলে ফেললেন। এবার নিশা রায়ের গায়ে নাইটিটা জড়িয়ে আছে কোমরের একটি মাত্র ফিতের ওপর। গলা থেকে পেট পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে এখন। একচুমুকে গ্লাসটা শেষ করলো পার্থ। তার গলাটা জ্বলছে, মাথাটাও। গ্লাসটা আবার নিশা রায়ের দিকে এগিয়ে দিল পার্থ। এবার নিজের ল্যাপটপে একটা হালকা রোমান্টিক মিউজিক চালালেন তিনি। তারপর গ্লাসটা ভরে পার্থর দিকে তাকিয়ে বললেন, “শ্যাল উই ড্যান্স?”
উঠে গিয়ে নিশা রায়ের শরীর স্পর্শ করলো পার্থ। সে বুঝে গেছে ভদ্রমহিলা কি করতে চাইছেন। কিন্তু কতদূর এগোবে এটা ভেবেই কুল পাচ্ছে না সে । একহাতে নিশা রায়ের কোমর জড়িয়ে অন্যহাতে নিশার গ্লাস সমেত মুঠোকে ধরল; তারপর গ্লাসে চুমুক দেওয়ার সাথে সাথে ইচ্ছা করেই ঠোঁট ছোঁয়ালো নিশার আঙ্গুলে। মিউজিকের সাথে সাথে পা পড়ছে দুজনের। ইষৎ নেশা চড়ে মাঝে মাঝে বেসামাল ও হচ্ছেন দুজনে। কখনো নিশার ভারী বুক ধাক্কা খাচ্ছে পার্থর বুকে আবার কখনো বা পার্থর হাত কোমর ছাড়িয়ে নেমে যাচ্ছে নিচে। পার্থ খানিকটা ইচ্ছা করেই কোমরের ফিতে টা ধরে টান মারলো; নাইটির পতন রুখতে গিয়ে বেসামাল হয়ে নিশা এবার পার্থর ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়লেন। হাতের গ্লাস থেকে হুইস্কির খানিকটা পড়ল নিশার শরীরে আর বাকিটা মেঝের কার্পেটে। নিশা রায়কে বিছানায় শুইয়ে তার শরীরে পরা হুইস্কি চেটে নিতে লাগলো পার্থ। বুকের খাজে, পেটে, নাভিতে পার্থর জিভের ছোঁয়া পেয়ে উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপতে লাগলেন তিনি। ব্রা-এর উপর দিয়েই তাঁর স্তন খামচে ধরল পার্থ, তারপর মুখ ডুবিয়ে দিল বিপজ্জনক উপত্যকায়।নিশার শরীর থেকে নাইটি টা একেবারে খুলে দিল পার্থ। নরম বিছানা আর নরম আলোর মধ্যে তাঁর অর্ধনগ্ন শরীর দেখে পুরনো কোনো ইংরাজি ছবির দৃশ্যের কথা মনে পরে গেল ওর। বয়সের কারণে ইষৎ ভারী হলেও নিশা রায়ের শরীর তার থেকে অনেক কমবযসিকেও ঈর্ষান্বিত করবে। ধবধবে ফর্সা শরীরে লেসের কাজ করা ব্রা ও প্যান্টি। পার্থ যে একেবারে অনভিজ্ঞ এমন নয়, কিন্তু তার বেশিরভাগ-ই কলেজের বান্ধবী কিম্বা অফিস কলিগদের সঙ্গে ছুটকো ছাটকা শরীর ছোঁয়া। ইন্টারকোর্সের অভিজ্ঞতা মাত্র দুবার। মদের নেশা আর ঘটনা পরম্পরায় খানিকটা বিহবল হয়ে পড়েছিল সে।
“কি হলো, চ্যাটার্জি, আর ইউ অলরাইট?”
“হ্যা, হ্যা — আমি ঠিক আছি একদম।”
“দেন, আর ইউ আফ্রেদ; ভয় পাচ্ছ?”
নিশা এবার একে একে পার্থর শার্ট আর লোয়ার টা খুলে দিলেন। পার্থ ও নিঃশব্দে নিজেকে ছেড়ে দিল তাঁর হাতে। নদীতে জোয়ার থাকলে সাঁতরানোর চেষ্টা করে লাভ নেই বরং নিজেকে ভাসিয়ে রেখে স্রোতের উপর ছেড়ে দেওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ। নিশা রায় পার্থকে শুইয়ে তার ওপর উঠে বসলেন। তারপর নিজের ব্রা-এর হুকটা খুলে তাঁর বিপুল স্তনভার উন্মুক্ত করলেন পার্থর সামনে। পার্থ হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করলো তার স্তন, স্তনবৃন্ত। নিশা রায় পার্থর ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দিলেন। পার্থ টের পেল তার পুরুসাঙ্গ অন্তর্বাস ভেদ করে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তার ডাকে সারা দিয়ে নিপুণ হাতে সেটিকে মুক্ত করলেন নিশা। কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর পার্থকে শুইয়ে রেখে নিশা তার কোমরের কাছে নেমে গেলেন। পার্থর অন্তর্বাসও নিঃক্ষিপ্ত হলো মেঝেতে। নিশা এবার খেলতে শুরু করলেন পার্থর লোহার মত শক্ত পুরুসাঙ্গ নিয়ে। ওপরের নরম চামড়াটা সরিয়ে চুমু খেলেন, চুসলেন বেশ কয়েকবার। আরামে, উত্তেজনায় ছটফট করে উঠলো পার্থ।
“কি? এনজয় করছ তো? আর বোর লাগছে না আশা করি। লেট আস ড্যান্স ওয়ানস মোর।”
নিশা পার্থকে টেনে তুললেন। ল্যাপটপের মিউজিক এখন আগের তুলনায় চটুল। প্যান্টি টা খুলে ফেলতেই পার্থ নিশা রায়ের পরিস্কার কামানো পুশিটা দেখতে পেল সে। নিশা এখন আরও উদ্দাম, বল্গাহীন। নিজের মনে নাচছেন আর সেইসঙ্গে তাঁর সমস্ত শরীরে ঢেউ উঠছে। ভারী স্তন দুলছে। পাছার মাংস আর চর্বিরাও তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। পার্থকে টেনে নিয়ে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। পার্থর পৌরুষ-দন্ড ধাক্কা মারতে লাগলো তার নরম তলপেটে।
“চ্যাটার্জি। ফাক মি। ফাক মি হার্ড।”
“ম্যাডাম!”
“কল মি নিশা।”
“নিশা!”
পাগলের মত নিশা কে চুমু খেতে লাগলো পার্থ। নিশা রায় পাকা খেলোয়াড়। তিনি পার্থকে উস্কে দিতে চেয়েছিলেন এবং সে কাজে তিনি একশভাগ সফল। তিনি চাইছিলেন যে পার্থ তাকে ছিঁড়ে খাক। পার্থ নিশা রায়ের স্তন নিয়ে চুষছে, টিপছে, কামড়াচ্ছে। নিশা এবার পার্থর মাথাটা গুঁজে দিলেন তার দুই পায়ের মাঝে। প্রায় দশ মিনিট পর পার্থ যখন মাথা তুলল তখন তার মুখচোখ নিশার যৌনরসে মাখামাখি। আর অপেক্ষা না করে নিশা পার্থর পুরুসাঙ্গ নিজের যোনির ভিতর ঢুকিয়ে নিলেন। “রেপ মি। আই য়াম অল ইওরস। রেপ মি লাইক আ হোর!”
পার্থর শেষতম যৌন অভিজ্ঞতা তার আগের অফিসের কলিগ সুমনার সঙ্গে। সেদিন কলকাতা ভেঙ্গে পড়ছিল বৃষ্টিতে। সুমনাকে বাড়িতে ছাড়তে গিয়েছিল পার্থ। শেষ পর্যন্ত সেও থেকে গিয়েছিল। সুমনা ছিল বেপরোয়া কিন্তু নভিস আর নিশা রায়- বিগত যৌবনা এক ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মত। কিছুক্ষণ আগেও পার্থকে নিয়ে খেলা করেছেন; ব্যবহার করেছেন, তার যৌন ইচ্ছাকে উস্কে দিয়েছেন চূড়ান্তভাবে – আর তারপর পার্থর যৌন ইচ্ছার গনগনে আঁচের মধ্যে সঁপে দিয়েছেন নিজেকে।
নিশার পিচ্ছিল যোনিদেশে দন্ড চালনা করতে করতে উত্তেজনার চরমে পৌঁছলো পার্থ। নিশার যোনির মধ্যে আগ্নেয়গিরির উত্তাপ। পার্থর মনে হচ্ছে নিশার যোনিপথ সুমনার থেকে চওড়া ও পিচ্ছিল; হয়ত বা বয়সের কারণেই। প্রথম বার তার লিঙ্গ নেওয়ার পর সুমনা রীতিমত চিত্কার করেছিল তাও পুরোটা ঢোকাতে পারেনি সে তখনও। আর এখন নিশার শরীরে মধ্যে অনায়াসে যাতায়াত করছে তার দন্ড। তার চোখের সামনে নিশার নগ্ন শরীর। প্রতিবার ঝাঁকুনির সঙ্গে দুলছে নিশার ভারী স্তন, কাঁধ, মাথা – সমস্ত শরীর। নিশার চোখ বোজা। প্রতিবার ধাক্কার সময় মুখ দিয়ে কিছু অস্ফুট গোঞানী বেরিয়ে আসছে।
“জোরে, জোরে, ফাক মি হার্ডার!” নিশার আদেশ পালন করলো পার্থ। তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করলো সে। উভয়ের শরীর ধাক্কা লেগে শব্দ উঠছে থপ-থপ করে। নিশার গোঞানী তীব্রতর হচ্ছে। হঠাত ই কোমরটা উঁচু করে পার্থকে খামচে ধরলেন নিশা। পার্থ অনুভব করলো নিশার যোনিপথে তরলের উপস্থিতি। হয়ে আসছিল তারও। নিশার শরীর থেকে নিজেকে মুক্ত করলো সে । নিশা রায়ের শায়িত তৃপ্ত দেহকেই ক্যানভাস হিসাবে বাছল পার্থ। আর কয়েক মুহূর্ত মাত্র!! নিশার পেট থেকে গলা অবধি তার তরল দিয়ে চিত্রকল্প তৈরী করলো সে।

0 comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...